শারেহুল হাদীস হযরতুল আল্লাম মাওলানা রফীক আহমদ
সিনিয়র মুহাদ্দিস আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া
মাওলানা রিজওয়ান রফীক জমীরাবাদী
শারেহুল হাদীস হযরতুল আল্লাম মাওরানা রফীক আহমদ সাহেব। পিতা জামিয়া পটিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, সাবেক শায়খুল হাদীস, সদরুল মুদাররেসীন হযরত আল্লামা আল-ইমাম আহমদ (রহ.)
শারেহুল হাদীছ ও উপমহাদেশে অন্যতম দ্বীনি ইলমী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
জন্মঃ
পিতাজী হযরত আল্লামা রফীক আহমদ সাহেব ১৩৬৪ হিজরী মোতাবেক ১৯৪৫ইং সনে চট্টগ্রামের চাঁন্দগাঁও থানার অন্তর্গত মোহরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম মোজাহের উলূম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হযরত মাওলানা ইসমাঈল সাহেব তাঁকে মধু পান করান এবং তাঁর কানে আযান দেন।
শিক্ষা-দীক্ষা:
৬ বছর বয়সে তিনি ইলমে নববীর পিপাসা মিটাতে ১৩৭০ হিঃ ১৯৫১ ইং সনে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ায় ভর্তি হন। কুতুবে যামান হযরত মাওলানা মুফতী আযীযুল হক রহ. তাঁকে র্কুআন মজীদের প্রথম সবক প্রদান করেন। অত্র জামিয়ার বড় বড় মনীষী গনের সান্নিধ্যে থেকে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে আরম্ভ করে ১৩ বছরের মধ্যে দরসে নিজামীর কিতাবসমূহ অত্যন্ত দক্ষতা ও পারদর্শিতার সাথে শেষ করেন। ১৩৮৪হিঃ ১৯৬৫ ইং সনে যুক্তি বিদ্যা ও হিকমত-ফলসফার কিতাবাদি- সদ্রা, শামসে বাজেগাহ, হাম্দুল্লাহ, উকলীদস, মুল্লা হাসান, খুলাসাতুল হিসাব, খিয়ালী, উমূরে আম্মা ইত্যাদি সমাপ্ত করেন। ১৩৮৬ হি ১৯৬৭ ইং সনে দাওরায়ে হাদীছ শরীফ তথা বর্তমান সরকারী স্বীকৃতি অনুযায়ী ইসলামিক ষ্টাডিজে মাষ্টার্স শেষ করেন। “আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিস বাংলাদেশে”এর অধীনে দাওরায়ে হাদীছের বার্ষিক পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। “সাওয়ানেহে আইম্মায়ে আরবাআ” তাঁকে পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয়। দাওরায়ে হাদীছের পরীক্ষায় তাঁর এহেন কৃতিত্ব ও যোগ্যতা দেখে পাকিস্তান কাওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব তাঁকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং এর জরুরী কার্যক্রমও সম্পন্ন করেন। কিন্তু তাঁর মরহুম আব্বাজান এবং অন্যান্য শিক্ষকগণের কাছে সে ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে তাঁদের পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় তাঁর মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া হয়নি।
শিক্ষক গণ:
তিনি শিক্ষা জীবনে যে সকল ওলামায়ে কেরাম, পীর-মশায়েখ ও বুজুর্গানে দ্বীনের নিকট ইলমে নববী আহরণের গৌরব অর্জন করেন তাঁদের প্রায়ই ছিলেন যুগের প্রখ্যাত, শ্রেষ্ঠ, অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁদের কৃতিত্ব ও অবদান মুসলমানদের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জল দিক হিসেবে পরিস্ফুট রয়েছে এখনও। তাঁরা হলেন নিজ পিতা হযরত আল্লামা আহমদ (ইমাম সাহেব হুযূর) রহ., খতীবে আজম হযরত আল্লামা সিদ্দীক আহমদ রহ., হযরত মাওলানা শাহ ইউনুস (হাজী সাহেব হুযূর) রহ. (দ্বিতীয় মহা পরিচালক আল-জামিয়া পটিয়া), হযরত আল্লামা আমীর হোসাইন (মীর সাহেব হুযূর) রহ. হযরত আল্লামা মাওলানা ফযলুর রহমান সাহেব বাঁশখালবী রহ. হযরত আল্লামা মুফতী ইব্রাহীম রহ. হাফেজে বুখারী আল্লামা মাওলানা আব্দুল্লাহ দরখাস্তী পাকিস্তান, হযরত মাওলানা খালেদ মাহমূদ, চীফ জাস্টিস, পাকিস্তান, হযরত মাওলানা আলী আহমদ (বোয়ালবী সাহেব হুযূর) রহ. হযরত মাওলানা হোসাইন আহমদ রহ. সাবেক নায়েবে মুহতামিম, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া ও সদরে মুদাররিসীন, পোকখালী মাদ্রাসা, হযরত মাওলানা ইসহাক (গাযী সাহেব হুযূর) রহ. হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুর রহমান সাহেব (মুঃজিঃ), প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা, প্রমুখ।
অধ্যাপনা:
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া থেকে হাদীছ, তাফসীর, যুক্তি বিদ্যা, বাংলা সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ে উচ্চতর জ্ঞান অর্জনের পর তাঁকে অধ্যাপনার জন্য বিভিন্ন মাদ্রাসার পক্ষ থেকে আহবান জানানো হলে তিনি ১৩৮৮হিজরী মোতাবেক ১৯৬৯ ইং সনে মুরুব্বীগণের পরামর্শক্রমে “রাউজান ইমদাদুল ইসলাম মাদ্রাসায়” সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এবং তাঁকে দিয়েই উক্ত মাদ্রাসায় জামাতে উলা (মিশকাত) আরম্ভ করা হয়। উক্ত মাদ্রাসায় শিক্ষকতা অবস্থায় ১৩৯১ হিজরী মোতাবেক ১৯৭২ ইং সনে এস, এস, সি পরীক্ষা দেন। ১৩৯৩ হিজরী মোতাবেক ১৯৭৪ ইং সনে “নানুপুর ওবাইদিয়া মাদ্রাসায়” দাওরায়ে হাদীছ আরম্ভ করার সময় দক্ষ ও পারদর্শী হাদীছের অধ্যাপক নিয়োগ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, তাঁকে উক্ত মাদ্রাসার মুহাদ্দিছ হিসেবে পেয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ খুবই আনন্দিত হয়েছিলেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি ছাত্রাবাস তত্বাবধায়কের দায়িত্বও পালন করেন। এরই মধ্যে তিনি অধ্যাপনা ও মাদ্রাসার বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার কাজে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী হয়ে উঠেন। উক্ত মাদ্রাসায় তিনি প্রায় চার বছর কৃতিত্বের সাথে হাদীছ, তাফসীর, ফিক্হ, তর্ক শাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিতাবাদির দরস প্রদান করেন। ১৩৯৭ হি. মোতাবেক ১৯৭৮ ইং সনে মুরুব্বীগণ ও আসাতিযায়ে কিরামের আহব্বানে আপন মাদরে ইলমী (মাতৃ বিদ্যাপীট),এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ায়” ইল্মী খিদমতে নিয়োজিত হন। অত্র জামিয়ায় তিনি “দরসে নিজামী”এর বিভিন্ন বিষয়ের কিতাবাদিসহ হাদীছ-তাফসীরের গুরুত্ব পূর্ণ কিতাবাদি পাঠ দানের পাশাপাশি দীর্ঘ কাল ছাত্রাবাস তত্তাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এবং “তর্ক বিদ্যা” বিভাগ ও “তাফসীরুল কোরআন” বিভাগের প্রধান হিসেবে এপর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি যে সকল কিতাবাদির দরস দান করেনঃ
তাহাবী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, শামায়েলে তিরমিযী, নাসায়ী শরীফ, মুয়াত্তা মালেক ও মুহাম্মদ, মেশকাত শরীফ (সম্পূর্ণ) নোখ্বাতুল ফিক্র, ইবনে কাছীর, বয়জাবী শরীফ, তাফসীরে মাদারিক, শরহে আকাঈদ, হেদায়া ১ম, ৩য়ও ৪র্থ খন্ড, কাওয়ায়ে’দ ফী উলূমিল হাদীছ, মায়বুযী, সুল্লামুল উলূম, দীওয়ানে হামাসা, মাক্বামাত, মুখতাসারুল মাআ’নী, সাবয়ে’ মুআল্লাকাত, দীওয়ানে মুতানাব্বী, হুসামী ও কাফিয়া ইত্যাদি।
আধ্যাত্মিক শিক্ষাঃ
ইলমে জাহেরী (কিতাবী ইলম) অর্জন শেষে ইলমে বাতেনী (আধ্যাত্মিক শিক্ষা) অর্জনের জন্য তিনি দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত ওলামায়েকেরাম ও পীর মশায়েখের সান্নিধ্য অর্জন করেছেন। তিনি অবশ্য ১৪০০ হি. ১৯৮১ ইং সালে তিনি দাদাজী হযরত ইমাম সাহেব হুজুর রহ. এর কাছ থেকে ইজাযত প্রাপ্ত হন।
মক্কা শরীফে তিনি হযরত আবরারুল হক্ব সাহেব (র্হাদূয়ী হযরত) রহ. এর কাছে বায়আত গ্রহণ করেন। এর পর থেকে হারদূয়ী হযরতের সাথে তাঁর শেষ জীবন পর্যন্ত চিঠি পত্রের মাধ্যমে ইলমে তরীকতের বিভিন্ন শিক্ষা গ্রহণ করেন।
হারদুয়ী হযরত একপত্রের জাবাবে লেখেন ইবাদতে স্বাদ পাওয়া মূল উদ্দেশ্য নয়। যথা সম্ভব ইবাদতেই থাকতে হবে”। আরেক পত্রের জবাবে লিখেন জাহেরী ও বাতেনী রোগের জন্য নিম্ন নিয়মে আমল করবেনঃ দরূদ শরীফ তিনবার, সূরায়ে ফাতেহা তিন বার, আয়াতুল কুরসী তিন বার, সূরায়ে ফলক তিন বার, সূরায়ে নাস তিন বার, এর পর দরূদ শরীফ তিন বার পড়ে পুরো শরীরে ফুঁক দিবে। প্রত্যেক নামাযের পর এ আমল করলে দুনিয়াবী ও দ্বীনী রোগ থেকে শেফা পাওয়া যাবে। আর সকল প্রকার জাহেরী রোগের শেফার জন্য ১১বার সূরায়ে ফলক ও নাস তিন তিনবার পড়ে পানিতে ফুঁক দিয়ে পান করাতে হবে। তাছাড়াও বিভিন্ন পীর মশায়েখের সাথে বায়আত মুরীদ ও সুলূকের শিক্ষা-দীক্ষা বিষয়ে বহু চিঠি পত্র আদান প্রদান হয়েছে। নমূনা সরূপ পরের অনুচ্ছেদে একটি চিঠি সংযুক্ত করা হয়েছে।
হজ্জ ব্রত পালন:
আল্লাহ প্রেমিক মুসলমান বিশেষ করে ওলামায়ে কেরাম সর্বক্ষণ আল্লাহর ঘর পবিত্র মক্কা ও রাওজাতুন্নবী সা. মদীনা মুনাওয়্যারা ইত্যাদি পবিত্র স্থান সমূহের যিয়ারত করার জন্য ব্যাকুল থাকেন। পিতাজিও তাঁর অর্জিত অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে পবিত্র হজ্জ্ব ব্রত পালনের জন্যে অন্তরে সর্বদা প্রত্যাশা লালন করছিলেন। সাথে সাথে সর্বক্ষণ তিনি দুআ’য়ও মশগুল থাকতেন। তাঁর এ আন্তরিক দুআ’ কবুল হয় এবং আল্লাহপাকের ঘরে গিয়ে লব্বাইক বলার সুযোগ হয়। ১৪১৩ হিজরী মোতাবেক ১৯৯৩ইং সনে তিনি পবিত্র হজ্জ্ব পালন করেন। সে সফরে মক্কা-মদীনার বিভিন্ন ঐতিহাসিক পবিত্র স্থান সমূহ যিয়ারত করেন। সৌদী আরবের কয়েকটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সেখানকার আলেম-ওলামার জিয়ারত, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের গ্রন্থাগারে নায়াব এবং কময়াব(বিরল) কিতাবাদি দেখার সুযোগ গ্রহণ করেন এ সফরে। বিশেষ করে জামিয়া উ¤মূল কুরা, জামিয়া ইসলামিয়া মদীনা মুনাওয়ারায় গিয়ে নিজ ইলমী পিপাসা অনেকটা মিটাতে সক্ষম হন। বিভিন্ন মাদ্রাসায় তাঁকে আমন্ত্রন জানানো হয়। প্রবাসীগণও তাঁকে বিভিন্ন স্থানে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যান। তিনি তাঁদের হর্ষ-বিষাদ সম্বলিত জীবনের অনেক দিক পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদেরকে ওয়াজ-নসীহত দ্বারা ভূষিত করেন। পবিত্র হজ্জ্ব ব্রত পালন শেষে তিনি জামিয়া পটিয়ায় পৌঁছলে ছাত্ররা তাঁকে বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরণ করে নেয়। তাঁর সম্মানে রচনা করা হয় আরবী-উর্দূ ভাষায় বহু কবিতা। এর দুটু সংরক্ষিত আছে। সেগুলো নমূনা স্বরূপ পরের অনুচ্ছেদে প্রকাশ করা হল।
বরেণ্য ওলামা ও পীর-মশায়েখের সান্নিধ্য লাভ :
পিতাজান হযরত আল্লামা রফীক আহমদ সাহেব দেশ-বিদেশের বিভিন্ন উচ্চ সারির আলেম-ওলামা ও পীর-মশায়েখের সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছেন। সে ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি উপস্থিত যা স্মরণে ছিল তা আমাকে বলেন।
তিনি সর্বাধিক যে মহান ব্যক্তির দীর্ঘ সান্নিধ্য অর্জন করেছেন তিনি হলেন নিজ পিতা আমার দাদাজি হযরত আল্লামা আহমদ (ইমাম সাহেব হুযূর) রহ.। তিনি যেমন তাঁর পিতা ছিলেন তেমনি তাঁর উস্তাদ এবং মুরশিদও ছিলেন। পিতাজি ৫০ বছর যাবৎ দাদাজির যে সান্নিধ্য পেয়েছেন তা বড়ই মহোত্তম জীবন ছিল বলে তিনি উল্লেখ করে বলেন, যখনই সুন্নাত ও মুস্তাহাব পরিপন্থী কোন সামান্য কিছুও দাদাজির নজরে পড়ত সাথে সাথে তিনি কঠোরভাবে তা সংশোধনের তাগিদ দিতেন। যার ফলে তাঁর সুন্দর চরিত্র গঠনও প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নাতের চর্চায় তিনি বেশির ভাগ দিকনির্দেশনা ও তত্বাবধান দাদাজির কাছেই পেয়েছেন।
জীবনের এক দীর্ঘ সময় তিনি আরেক মহান ব্যক্তির সান্নিধ্য অর্জন করতে সক্ষম হন, তিনি হলেন কুতবে যামান হযরত আল্লামা মুফতী আযীযুল হক রহ.। ছয় বছর বয়সে তিনি যখন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ায় ভর্তি হন তখন হযরত মুফতী আযীযুল হক রহ. তাঁকে পবিত্র কোরআনের প্রথম সবক পড়িয়ে দিয়ে তাঁর শিক্ষা জীবনের বরকতময় স্তম্ভটির গোড়া পত্তন করেন। দশ বছর যাবৎ তিনি হযরত মুফতী সাহেব রহ. এর অতি নিকটে থেকেই লেখা পড়া শেষ করতে সক্ষম হন। তিনি দাদাজির রুমেই থাকতেন। দাদাজির রুম ছিল হযরত মুফতী সাহেব রহ. এর পাশা পাশি। যার ফলে তিনি হযরত মুফতী সাহেব রহ. এর ওয়াজ-নসীহত এবং হুযূরের সরাসরি তত্বাবধান পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন।
বাংলার প্রথম মুহাদ্দিছ হযরত আল্লামা সাঈদ আহমদ সাহেব সন্দীপী খতমে বুখারী উপলক্ষ্যে জামেয়া পটিয়ায় আগমণ করলে তাঁর সাথে বিশেষ সাক্ষাত লাভের সুযোগ হয়। দাদাজির উস্তাজ জিরি মাদ্রাসার প্রথম মুহাদ্দিছ হযরত আল্লামা আব্দুল ওয়াদূদ রহ. সন্দ্বীপীর কাছাকাছি বসার এবং হাদিয়া বিনিময় ও তা স্বানন্দে গ্রহণ করার মাধ্যমে দু’আ পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। হযরত মাওলানা মুফতী ফয়জুল্লাহ সাহেব রহ. ও হাকীমূল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ. এর বিশিষ্ট খলিফা হযরত মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব সাহেব রহ. এর সাথে বসে কথা বলা এবং ওয়াজ-নসীহত শ্রবণ করার সুযোগ হয়েছে এবং তাঁদের জানাযায় অংশ নেওয়ার সৌভাগ্যও অর্জন হয়েছে বলে জানান।
জিরি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা আহমদ হাসান রহ. ও তাঁর সহকারী হযরত মাওলানা মুফতী নূরুল হক্ব সাহেব রহ. এর সান্নিধ্যে বসে ওয়াজ-নসীহত শ্রবণ এবং হযরত আহমদ হাসান সাহেব রহ. এর ইন্তিকাল পূর্ব অসুস্থাবস্থায় তাঁর সেবা-সশ্র“ষা করা এবং তাঁদের উভয়ের জানাযায় শরীক হতে পারায় তিনি অত্যন্ত খুশি প্রকাশ করেন। তেমনি চট্টগ্রাম মিয়াখাঁন নগর মুজাহেরুল উলূম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসমাঈল সাহেবের ওয়াজ নসীহত শ্রবনের ব্রতি অর্জন করেন কয়েক বার।
জীবনের কিছু সময় তিনি হযরত মাওলানা সুলতান আহমদ নানুপুরী রহ. এর সুহবতে ব্যয় করেন। নানুপূর মাদ্রাসায় তিনি চার বছর যাবৎ উস্তাযুলহাদীছ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি হযরত নানুপূরী সাহেব রহ.এর গভীর আস্তা ও স্নেহ কুড়াতে সক্ষম হন। হযরত নানুপুরী হুযূর রহ. একদিন একটি স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে বলেন যে, আমি এক সময় রাঙ্গুনিয়ায় গেলে এক বুজুর্গ আমাকে বললেন, আপনার মাদ্রাসায় কিছু শয়তান ঢুকতে চায়, মাওঃ রফীক আহমদ সাহেব সে শয়তানদেরকে বাঁশ দিয়ে মেরে মেরে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এর ভিত্তিতে নানুপূরী হযরত বলেন এ স্বপ্ন শুনার পর থেকে আমি অন্যত্র গেলে আমার কোনই চিন্তা থাকে না। কারণ আপনিতো মাদ্রাসাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন। হযরত নানুপূরী সাহেব রহ. একদা পিতাজিকে বলেন, তুমি সব সময় যিক্রে মশগুল থাক এবং সাহ্রীতে (শেষ রাত্রিতে) উঠ। তাই আমি একটা কথা বলতে চাই; কিন্তু তুমি তো আমার মুরীদ নও, তাই আমি ইমাম সাহেব হুযূরের সাথে সাক্ষাত করব। অতপর এক দিন নানূপুরী হুযূর রহ. নিজ মাথার টুপিটি তাঁকে পরিয়ে দেন।
নানুপূর মাদ্রাসায় থাকা অবস্থায় মুহাম্মদ মিয়া সূফী নামক সিলসিলায়ে গাঙ্গুহীর একজন বুজুর্গ বলেন, তুমি তো ইমাম সাহেব হুযূরের ছেলে! আমি তোমাকে এজাযত দিলাম। কারণ আমি স্বপ্নে একটি বিশেষ মজ্লিসে যে সব ব্যক্তিকে দেখেছি তাদের সকলকে ইজাযত দিতে আগ্রহী। হযরত মাওলানা হারুন বাবু নগরী রহ. এর সাথেও তাঁর বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তার কাছ থেকেও মা’রিফাত ও সুলূকের অনেক কিছু অর্জন করতে সক্ষম হন।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে ষ্টেশন মসজিদে বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা শামছুল হক্ব ফরীদপূরী (সদর সাহেব) রহ. এর সান্নিধ্যে বসে কথা বলা এবং উপদেশ গ্রহণ করার সুযোগ হয়। প্রখ্যাত বুজুর্গ হযরত মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব (পীরজীহুজুর) রহ. এর সাথেও বিশেষ ভাবে আলাপের সৌভাগ্য হয়। ফেনী ওলামা বাজার মাদ্রাসার প্রাক্তন মুহতামিম হযরত মাওলানা আব্দুল হালীম সাহেব রহ. যিনি হযরত মাওলানা নূর বখশ সাহেবের অন্যতম খলীফা ছিলেন তাঁর সাথেও দু-তিনবার বসার সুযোগ হয়েছে। হযরত মাওলানা আবদুল হালীম রহ. যে কোন সময় জামেয়া পটিয়ার দাওয়াতে আসলে, যাতায়াত বাবত দেওয়া টাকার ব্যাপারে বলতেন, আমার তো এত টাকা খরচ হয়নি।
হযরত আল্লামা আন্ওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী রহ. এর ছাত্র এবং হযরত মাওলানা জফর আহমদ ওসমানী রহ. এর বিশিষ্ট খলীফা, হযরত আল্লামা মুফতী শফী রহ. এর সহপাঠী হযরত মওলানা ফজলুর রহমান সাহেব তাঁর বিশেষ আসাতেযার মধ্যে অন্যতম। তিনি হযরতের কাছে জালালাইন ও হিদায়া (আঊয়ালাইন) পড়েন। হযরতের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আমাদের ঘর থেকেই হতো। তিনি পিতাজি কে বলতেন, রফীক! তুমিতো পাপমুক্ত, আর আমি পাপী। সুতরাং আমার জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করবে।
জামিয়া পটিয়ার দ্বিতীয় মুহতামিম হযরত মাওলানা ইউনুস সাহেব (হাজী সাহেব হুযূর) এর সান্নিধ্যেও তিনি দীর্ঘ দিন থাকার সুযোগ পান। তাঁর সাথে সাক্ষাত হলে তিনি স্বস্নেহে বলতেন রফীক নাকি? এ স্নেহময়ী আওয়াজ শ্রবনে পিতাজির অন্তর খুবই উৎফুল্ল হতো। হযরত আল্লামা আমীর হোসাইন (মীর সাহেব হুযূর) রহ., হযরত আল্লামা সিদ্দীক আহমদ (খতীবে আজম) রহ. তাঁর শফীক আসাতিযার মধ্যে ছিলেন। সে হিসেবে দীর্ঘ দিন তাঁদের সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ হয়। খতীবে আজম রহ. তাঁকে বলেছেন, মওদূদী ফিৎনা থেকে মুসলমানদেরকে পরিত্রান দেওয়ার জন্য তাদেরকে তাবলীগ মূখী করা দরকার।
হযরত মাওলানা আলী আহমদ বোয়ালভী রহ. এর সুহবতেও মাঝে মাঝে বসার সুযোগ হতো। বিভিন্ন লোককে তিনি বোয়ালভী সাহেব রহ. এর কাছে নিয়ে বায়’আত করাতেন। বোয়ালভী হযরত রহ. বলতেন, মুরিদান বাড়িয়ে কি লাভ? মুরিদ কি জন্য হচ্ছে সেটাই জানার বিষয়। একদা তিনি পিতাজিকে বলেন, তুমি আমাকে যে স্বপ্নের কথা বলেছ তা শুনার পর থেকে আমি তোমাকে অধিক স্নেহ করি।
১৪২৫ হিজরী সনে বি.বাড়িয়ায় এক মহাসম্মেলনে পিতাজির দাওয়াত ছিল। সেখানে এটেন্ট করতে গেলে “মুফাসসির হুযূর” নামে খ্যাত ১৩০ বছর বয়সী মাওলানা সিরাজ আহমদ সাহেবের সাথে তাঁর সাক্ষাত হয়। তিনি তাঁকে মাথায় হাত রেখে দোয়া করেন।
বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ও জামিয়াতুল আবরার বাংলাদেশ রিভার ভিউ-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, জামিয়া পটিয়ার প্রাক্তন সহকারী পরিচালক হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুর রহমান সাহেব পিতাজির শফীক আসাতিযার মধ্যে অন্যতম। জামিয়া পটিয়ায় থাকাকালীন তাঁর খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আমাদের ঘরেই হতো। সে হিসেবে পিতাজি দ্বীনি ও দুনিয়াবী অনেক বিষয়ে তাঁর কাছে বেশ উপকৃত হয়েছেন। জামিয়া পটিয়া থেকে পিতাজি ফারিগ হওয়ার পর পাকিস্তান বেফাকুল মাদারিসের সেক্রেটারী হযরত মওলানা মতীন খতীব সাহেব তাঁকে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। সে সময় হযরত মুফতী আব্দুর রহমান সাহেব পিতাজিকে নেতিবাচক পরামর্শ দেন। তিনি বলেন হাদীছের উপর তোমার পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা হয়নি। যার কারণে তুমি সেখানে গেলে গায়রে মুকাল্লিদ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তুমি হয়ত মনে করছ, সেখানে চার বছর থাকলে চারবার হজ্জ পালন করতে পারবে, এবং আর্থিক ভাবে ও সাবলম্বী হতে পারবে। কিন্তু সে লাভের চেয়ে আসলাফের পথ থেকে বিচ্যুত হওয়াটা তোমার জন্য আরো ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে। পিতাজি নানুপূর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিছ হিসেবে নিয়োগপ্রপ্ত হওয়ার পর একদিন হযরত মুফতী সাহেব হুজুর সেখানে গিয়ে শিক্ষা বিভাগীয় পরিচালককে তাকসীমে কিতাবের ক্ষেত্রে বিশেষ পরামর্শ প্রদান করেছিলেন। হযরত মুফতী সাহেব হুযূর ছিলেন আমাদের ঘরের যাবতীয় ব্যাপারে মান্যবর মুরব্বী। আমাদের পরিবারের যে কোন সমস্যা সমাধানে তিনি স্বতস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসেন।
পাক-ভারতের প্রখ্যাত মনীষীগণের সান্নিধ্যে পিতাজিঃ
বাংলাদেশের বরেণ্য ওলামায়েকেরাম ও পীর মশায়েখের পাশা-পাশি পাক ভারতের প্রখ্যাত মনীষীদের অনেকের সান্নিধ্য অর্জন ও স্বাক্ষাতে ধন্য হন পিতাজি হযরত আল্লমা রফীক আহমদ। বড় মাপের এসকলার আলেমে দ্বীন ও পীর মশায়েখের অনেকের কাছ থেকে তিনি যেমন নেক দোয়া পান আবার অনেকের কাছ থেকে তাঁর লেখা-লেখীর ক্ষেত্রেও উৎসাহ-সহযোগিতা পান।
* হযরত মাওলানা আব্দুর রহীম রায়পুরী রহ. এর খলীফা হযরত মাওলানা আব্দুল কাদের রায়পুরী ও দারুল উলূম দেওবন্দের প্রধান মুফতী প্রখ্যাত হাদীছ বিশারদ হযরত মাওলানা মাহমুদ হাসান রহ. এর সান্নিধ্য অর্জনের সৌভাগ্য নসীব হয়।
* প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ মা’আরিফুল কোরআন এর লেখক হযরত আল্লামা মুফতী শফী সাহেব রহ., দারুল উলূম দেওবন্দের প্রাক্তন মহাপরিচালক আল্লামা কারী তৈয়ব সাহেব রহ. এবং “এলাউস সুনান” গ্রন্থের লেখক হযরত মাওলানা জফর আহমদ উছমানী রহ. ও হযরত মাওলান শামশুল হক আফগানী রহ. প্রমূখের সান্নিধ্য অর্জন এবং তাঁদের সাথে কাছাকাছি বসে আলোচনা ও মতবিনিময়ের সুযোগ হয়। পিতাজি তাঁদের সম্মানে স্বরচিত আরবী কবিতা পাঠ করেছিলেন। কবিতাগুলো নমুনা স্বরূপ পরের অনুচ্ছেদে প্রকাশ কারা হয়েছে।
হাফেজে বুখারী নামে খ্যাত হযরত আল্লামা আব্দুল্লাহ (দরখাস্তী) রহ. এর কাছে বোখারী শরীফের সমাপ্তিতে হাদীছ পড়ার সুযোগ পান এবং তাঁর কাছ থেকে হাদীছের অনুমতি প্রাপ্ত হন।
ভারতের প্রসিদ্ধ দ্বীনী শিক্ষা কেন্দ্র নদওয়াতুল উলামা লাক্ষনৌ এর পরিচালক প্রখ্যাত আরবী সহিত্য বিশারদ হযরত আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রহ. এর সাথে দীর্ঘ সময় আলাপ আলোচনা ও মতবিনিময়ের সুযোগ লাভ করেন। হযরত নদভী রহ. এর রচিত কাসাসুন্নবিয়্যীন সিরিজটির ৪র্থ খন্ডের ব্যাখ্যা লিখেন পিতাজি। কিতাবটির ব্যাপারে লম্বা আলোচনা হয় স্বয়ং রচয়িতার সাথে। হযরত নদভী সাহেব রহ. পিতাজিকে তাঁর লেখনীর ব্যাপারে বিরল ভাবে উৎসাহ প্রদান করেন। তাঁর সাথে মত বিনিময়ের কিছু কথা কাসাসুন্নবিয়্যীন ৪র্থ খন্ডের ভূমিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।
পবিত্র মক্কা শরীফের ইমাম আব্দুল্লাহ বিন সুবাইয়্যীল জামিয়া পটিয়ায় আগমণ করলে পিতাজী আরবী ভাষায় অত্যন্ত সাহিত্যপূর্ণ একটি কবিতা লিখেন।
একদা পাকিস্তানের নিউটাউন মাদ্রাসার পরিচালক ড. হাবিবুল্লাহ মুখতার রহ. জামিয়া পটিয়ায় আগমন করেন। কিছুক্ষন পর দেখলাম গাড়ীতে করে সরাসরি দাদাজীর নিকট চলে আসেন। এসুবাদে তাঁর সাথে পিতাজীর সাক্ষাত হলে তিনি নিজ রচিত বেশ কিছু কিতাব হাদিয়া স্বরূপ প্রদান করেন। তাঁর সাথেও পিতাজীর বেশ কিছুক্ষণ মতবিনিময় হলো এবং পিতাজিকে তাঁর লেখালেখি নিয়ে বেশ উৎসাহ যোগালেন। দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, এর কিছু দিন পর পাকিস্তানে তিনি শীআ’দের হাতে শাহাদত বরণ করেণ।
মোট কথা, পিতাজী জীবনের প্রারম্ভ থেকে এ পর্যন্ত দেশ বিদেশের প্রখ্যাত ও বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম ও পীর-মশায়েখের সান্নিধ্য ও সাক্ষাতের গৌরব অর্জন করেন। তাঁর আখলাকী শুভ্রতা, অন্তরের স্বচ্ছতা, শিক্ষার যোগ্যতা, প্রাশাসনিক দক্ষতা, লেখনীর উৎকর্ষতা এবং স্বকীয়তা পরিদৃষ্টে সকল মুরুব্বী, আসাতেযা ও পীর মশায়েখ তাঁকে খুবই নেক নজরে দেখতেন। তাঁর অভিমত অনুসারে এ কথা বলাই বাহুল্য যে, এসকল বুজুর্গানে দ্বীনের সান্নিধ্য, নেক নজর ও নেক দোয়ার বরকতেই তাঁর এ পর্যন্ত পৌঁছা।
লেখা-লেখির জগতে তাঁর কৃতিত্ব :
পিতাজী শিক্ষা নিবেস অবস্থা থেকে লেখা-লেখির প্রতি ঝুঁক প্রবণ ছিলেন। তখন থেকে তিনি আরবী, উর্দূ সাহিত্য চর্চায় কবিতা, আর্টিক্যাল, নিবন্ধ ইত্যাদি লেখায় অভ্যস্ত ছিলেন। তখনকার যুগে প্রিন্ট জগত ছিল অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ এবং জটিলতর। সে সময় থেকে তিনি কিতাবাদি লিখেছেন এবং তা প্রকাশও হয়েছে। ক্রমান্বয়ে তাঁর লেখা-লেখি এমন এক পর্যায়ে পৌছে গেছে যে, বর্তমানে তিনি শারেহে হাদীছ বা হাদীছের ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচানায় বাংলাদেশ এমনকি উপমহাদেশে বিশেষ স্থানের অধিকারী হয়েছেন। তাঁর কিতাবাদি উপমহাদেশে এতই জনপ্রিয়তা ও মাকবূলিয়্যাত পেয়েছে, যে কোন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁর রচিত কিতাবাদি আলেম-ওলামা ও ছাত্রদের কাছে ইলমী সম্বল হিসেবে সংরক্ষণ করতে দেখা যায়। অন্য দিকে ফেরাকে বাতেলা তথা ইসলামের নামে বাতিল সম্প্রদায় সমূহের বিরুদ্ধে তাঁর রচিত গ্রন্থাবলীরও একটি সূচী তৈরী হয়েছে। যে কিতাবাদি বাতিল র্ফিকা সমূহের মুখোশ উন্মোচনে সক্ষম হয়েছে ,তাঁর ক্ষুরধার লেখনী যেমন বাতিল ফিরকাগুলোকে প্রকম্পিত করেছে তেমনি হক্পন্থীদের অন্তরে আশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে। স্পষ্ট করে দিয়েছে হক ও বাতিলের মাঝে বিস্তর পার্থক্যের রেখাকে। তাঁর রচিত ও সংকলিত অনবদ্ধ কতিপয় গ্রন্থ কিঞ্চিত বৈশিষ্টসহ নিম্নে প্রদত্ত হল।
তাঁর লিখিত কিতাবাদী
১. ইফাদাতুল মুসলিম শরহে সহীহ মুসলিম
বিশুদ্ধ হাদীছ সংকলন সহীহ মুসলিম শরীফেরএকটি ব্যখ্যা গ্রন্থ।
মুসলিম শরীফের বিখ্যাত জটিল মুকাদ্দিমার সহজ বিশ্লেষণ èপ্রত্যেকটি হাদীছ মূল ইবারত সহ সহজ অনুবাদ èকঠিন শব্দ ও বাক্য বিশ্লেষণ èহাদীসের বিস্তারিত ব্যখ্যাও বিশ্লেষণে অতিরিক্ত ও বাহুল্য মুক্ত ইলমি তাহকীক ও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ èহাদীস হতে উদ্ভাবিত ফিকহি মাসয়ালা ও ইমামগণের অভিমত প্রমাণ সহ উপস্থাপন èহানাফি মাযহাবের পক্ষথেকে অন্যান্য ইমামদের প্রমাণাদির উত্তর è শাফেয়ী মাযহাবি মুসলিম শরীফের ব্যখ্যাকার আল্লামা ইমাম নব্বীর রহ. কর্তৃক হানাফি মাযহাবের প্রতি আরোপিত অভিযোগ ও প্রশ্নর সমুহের জবাবসম্বলিত শরহে হাদীছের এ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
২. ঈযাহুল মিশকাত
মিশকাতুল মাসাবীহ’র অসাধারণ একটি ব্যখ্যা গ্রন্থ
এ অনবদ্য কৃতিত্বের মূল্যায়ন বরেণ্য মনীষীরা করেছেন এভাবে
“এর বিষয় বিন্যাস ও বর্ণনাধারা দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি ”
= আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরি রহ.এর স্নেহধন্য ছাত্র ও আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার প্রথম শায়খুল হাদীছ ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আল-ইমাম আহমদ রহ.।
“শব্দ বিশ্লেষণ, জটিল বিষয়ের ব্যখ্যা ও বিতর্কিত মাসায়েলে প্রমাণ সহ ইমামগণের অভিমত উপস্থাপন করতে লেখক যে অকৃত্রিম পরিশ্রম করেছেন তা সত্যই প্রসংশাযোগ্য”
= আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানি রহ.এর বিশিষ্ট ছাত্র দারুল উলুম হাটাজারীর প্রাক্তন শায়খুল হাদীছ আল্লামা আব্দুল আজীজ রহ.।
“এতে ফিকহুল হাদীছ, শরহুল হাদীছ ও হুকমুল হাদীছের উপর নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পেশ করা হয়েছে এবং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মনীষীদের সুক্ষ্ম কথাগুলো অত্যন্ত সহজ ভাবে লিখা হয়েছে”
= আল্লামা আনযার শাহ কাশ্মীরি দা.বা. শায়খুল হাদীছ দারুল উলুম (ওয়াকফ) দেওবন্দ ।
“এ ব্যখ্যা গ্রন্থটি বিরক্তিকর দীর্ঘতা ও ক্ষতিকর সংক্ষিপ্ততা হতে মুক্ত”
= আল্লামা আব্দুল হক আ’জমী রহ. দারুল উলুম দেওবন্দ।
“এ ব্যখ্যা গ্রন্থটি অত্যন্ত সহায়ক, সহজ ও পরিপূর্ণ, এতে শিক্ষার্থীদের সামনে দীর্ঘতা পরিহার করে সারাংশ পেশ করা হয়েছে”
= আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপূরী, মুফতি ও মুহাদ্দিছ, দারুল উলুম দেওবন্দ।
“এসময়ের ছাত্র-শিক্ষক-প্রবীণ সকলের জন্যই এ কিতাব অত্যন্ত উপকারী”
= আল্লামা খালিদ মাহমুদ, পরিচালক, ইসলামিক একাডেমি, ম্যান্চেষ্টার, লন্ডন ও প্রধান বিচারপতি শরয়ীআদালত, পাকিস্তান।
“এতে বিশেষভাবে আধুনিক বিষয়গুলোর উপর প্রমাণ সহ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যারফলে সত্য-মিথ্যা পূর্ণরূপে প্রতিভাত হয়ে উঠেছে ”
= শায়খুল হাদীছ আল্লামা ইসহাক আলগাজী রহ. প্রাক্তন শায়খুল হাদীছ ও প্রধান মুফতি আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া।
“এটি একটি দুর্লভ জ্ঞান ভান্ডার, যা মৌলিক ও প্রাসঙ্গিক মূল্যবান তত্ত্বে পরিপূর্ণ”
= আল্লামা ইসহাক কানাইমাদারী রহ. সাবেক প্রবীণ মুহাদ্দিছ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া।
৩. আক্বরাবুল ওয়াসায়েল ইলা শরহিশ শামায়েল
মানবতার আদর্শ মহানবী স. এর উজ্জল জীবনও চরিত্রের অমর সংকলন “শামায়েলে তিরমিযির” অসাধারণ ব্যখ্যাগ্রন্থ, যাতে রয়েছে
হাদীছের মূল ইবারতের শাব্দিক বিশ্লেষণ সহ অনুবাদ ও তাত্ত্বিক বিশদ আলোচনা èহাদীছের ব্যখ্যা পটভূমি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কিত আলোচনা èহাদীছ হতে উদ্ভাবিত ফিকহি মাসয়ালা ও ইমাম গণের অভিমত èহানাফি মাযাহাবের প্রাধান্য ও অন্যান্য ইমাম গণের প্রমাণাদির উত্তর, গুরুত্বপূর্ণ বাক্যের তারকীব èযবতীয় বিষয়ের সহজ èসরল ও সাবলীল আলোচনা
৪. কুররাতুল আইনাইন ফী হষয়-ই মুগ্লাকাত-ই মুআত্তাআইন
মুয়াত্তা ইমাম মালিক রহ. ও মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ রহ. এর জটিল জটিল বিষয়ের সহজ ব্যখ্যাও বিশ্লেষণ।
এতে রয়েছে-হাদীছের শাব্দিক বিশ্লেষণ, ব্যখ্যা ও তাত্ত্বিক আলোচনা, ইমামগণের ইখতেলাফ প্রমাণ সহ উপস্থাপন, পরষ্পর বিরোধী বর্ণনার সামঞ্জস্য বিধান ও বিরোধ অবসান ।
৫. দরসে হিদায়া
হানাফি মাযহাবের নির্ভরযোগ্য ফিকাহ্ সংকলন আল হিদায়ার অসাধারণ ব্যখ্যাগ্রন্থ । এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য-
একটি গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘ ভুমিকায় ফিকাহ শাস্ত্রের উৎপত্তি, ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা, চার মাযহাবের প্রধান চার ইমাম সহ আরো অন্যান্য ইমাম গণের জীবন বৃত্তান্ত বর্ণনা, হিদায়া গ্রন্থকারের উদ্ধৃত দুর্বল হাদীস গুলোকে একাধিক বিশুদ্ধ সহীহ হাদীছ দ্বারা সমর্থিত করে শক্তিশালী করণ, কঠিন বাক্যের সরল বঙ্গানুবাদ, সহীহ হাদীছ দ্বারা দলীল না দেয়া সহ হিদায়া গ্রন্থাকারের উপর আরোপিত সকল অভিযোগের জবাবে প্রত্যেকটি ইখতেলাফি মাসয়ালার প্রমাণ কুরআনের আয়াত ও বহু সংখ্যক সহীহ হাদীছ বর্ণনাকারী ও গ্রন্থপঞ্জী সহ উপস্থাপন, সমকালীন বিভিন্ন সমস্যার সমাধান।
৬. হাদীস পরিচিতিঃ ভারত-বাংলাদেশের প্রাতঃ স্মরণীয় আউলিয়া ও মুহাদ্দিছীন
হাদীছ শাস্ত্রের উৎস, উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস, হাদীছের বিস্তারিত পরিচিতি এবং উপমহাদেশে হাদীছ চর্চার ইতিহাস সহ ভারত ও বাংলাদেশের মহান বিদগ্ধ হাদীছ বিশারদ গণের জীবনী সংকলন।
৭. ইরশাদুত্তালিবীন ফী আহওয়ালিল মুসাল্লিফীন
দরসে নিযামির সকল কিতাব সহ গুরুত্বপূর্ণ বহু কিতাবের মুসান্নিফীন কিরামের মহিমান্বিত জীবন চরিত ও অবদান সম্বলিত গুরুত্বপূর্ণ সংকলন ।
৮.যাহরুন নূজুম ফী মা’রিফাতিল ফুনূনি ওয়াল উলূম
তেত্রিশ টি শাস্ত্রের পরিচিতি ,আলোচ্য বিষয়,লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, নামকরণ, উদ্ভব-উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের সুবিন্যস্ত বিশ্লেষণ। বিশেষত: উলুমে কুরআনের আলোচ্যবিষয়, তাফসীর শাস্ত্রের বিকাশধারা ও পাশ্চাত্যের কুরআন বিকৃতিকারী ও তার জবাবদানকারীদের নামের তালিকা।
৯. আল ইন্শাউল জাদীদ মা’আললুগাতি ওয়াল খিতাবাত
দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ৩২টি বিষয়ের বিষয় ভিত্তিক আরবি-উর্দু-বাংলা-ইংরেজী শব্দ ভান্ডার সহ গুরুত্বপূর্ণ ও আধুনিক আরবি রচনাবলী, পত্র, বক্তৃতা, সম্ভাষণ পত্র ও আবেদন পত্র সম্বলিত এক চমৎকার সংকলন।
১০. হিদায়াতুল মুস্তার শিদীন ইলা হল্লি আভীসাতি কাসাসুন্নাবিয়্যীন।
সায়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. এর বিখ্যাত রচনা “কাসাসুন্নবিয়্যীন” এর ৩য় ও ৪র্থ খন্ডের উর্র্দু অনুবাদ, শব্দ বিশ্লেষণ ও টিকার সুন্দর সমাহার।
১১. কাসাসুন্নাবিয়্যীন
আবুল হাসান আলী নদভী রহ. এর বিখ্যাত রচনা “কাসাসুন্নবিয়্যীন” এর ৪র্থ খন্ডের বাংলা অনুবাদ, শব্দ বিশ্লেষণ ও টিকার সুন্দর সমাহার।
১২. আল কালামূল মু’তাবার ফী তাউযীহি নূরি সায়্যিদিল বাশার
বেরলভীদের নেতা মাওলানা আজিজুল হক (শেরে বাংলা) সাহেবের মাহফিলে দু’বার উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্য শুনেন এবং তার সঙ্গে আলোচনার পর লেখক এ পুস্তকটি এবং শিরক ও বেদআ’ত, মো’মেনের মর্যাদায় আল কুরআন, কোরআন সুন্নাহর স্বরূপ পুস্তকগুলো রচনা করেন। তিনি তার ওয়াজে প্রায়শ: আহলে সুন্নাত ওয়ালজামাতের তথা দেওবন্দীদের উদ্দেশ্য করে কটুবাক্য উচ্চারণ করতে দ্বিধা বোধ করতেন না। এমন কি তার মুনাজাতে এই পঙক্তি পড়তেন, --------------------অর্থ
= হে আল্লাহ্ আমাদের দেশ থেকে ওহাবীদের কে বিতাড়িত কর!
= আমাদের দেশ থেকে তাদের মাদ্রাসা গুলোকে উচ্ছেদ কর!
১৩. মহা মানব সা. এর নূর প্রসঙ্গ
মহামানব হযরত মুহাম্মদ সা. এর সত্তা সম্পর্কিত আলোচনা। তিনি কি নুরের তৈরী? নাকি মাটির? কুরআন ও হাদীছের আলোকে তার বিস্তারিত আলোচনা ।
১৪. মওদূদী সাহেব কি তাফসীর ওয়া নাযারিয়্যাত পর ইলমি ওয়া তাহক্বীক্বী জায়েযাহ।
১৩৮৭ হিজরীতে লেখক চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত মওদুদী সাহেবের এক সম্মেলনে সরাসরি উপস্থিত হয়ে তাঁর বিভ্রান্তিকর কুরআন হাদীসের অপব্যখ্যা সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত হয়ে উর্দুতে এ গ্রন্থ টি রচনার প্রয়াস পান।
১৫. মওদূদীর তাফসীর ও চিন্তাধারা ঃএকটি তত্ত্বমুলক পর্যালোচনা
জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদূদী সাহেবের বিবিধ ভুল ত্র“টি ও গোমরাহী সর্স্পকে কুরআন, হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থের উদ্ধৃতির আলোকে পর্যালোচনা ও সমকালীন হক্কানী উলামায়ে কেরামের অভিমত ও অবস্থান সম্পর্কিত একটি গবেষণামূলক তাত্ত্বিক আলোচনা গ্রন্থ।
১৬. মাওয়ায়েযে খতীবে আ’জম রহ.।
খতীবে আ’জম আল্লামা সিদ্দীক আহমদ রহ. এর মূল্যবান আলোচনা ও বক্তৃতা, এবং মাওলানা ইহতিশামুল হক থানবী রহ.এর দূর্লভ নসীহত।
১৭.আত তাকার রুব ইলাল্লাহি তা’আলা।
তাসাওঊফ সম্পর্কে কুরআন, হাদীছ ও পূর্ববর্তী আউলিয়ে কিরামের রচনা ও উপদেশ হতে সংকলিত এক অতি প্রয়োজনীয় সংকলন।
১৮. নফস কি চন্দ বিমরিয়াঁ আওর উনকা ই’লাজ।
মানবআত্মার আধ্যাত্মিক রোগ-ত্র“টি সম্পর্কিত বিশদ আলোচনা ও তার প্রতিকার নির্দেশনা।
১৯. খতমে নুবুওয়্যাত ।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বশেষ নবী হওয়া সম্পর্কে প্রামাণ্য আলোচনা সহ কুরআন-হাদীছের আলেকে দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদীর আগমন ও হযরত ঈসা আ. এর পুন:অবতরণের আলোচনা।
২০. কুরআন-সুন্নাহর স্বরূপ
ইসলামী শরীয়তে র্কআান ও সুন্নাহ্’র অবস্থান ও অকাট্যতা সম্পর্কে লিখিত এ পুস্তিকা।
২১. মু’মিনের মর্যাদায় আল র্কুআ ।
ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও মু’মিনের সফলতা সম্পর্কিত আলোচনা।
২২. আয্ যিয়াদাতু ফী যিকরে আহওয়ালিল জিন।
জিন জাতির পরিচিতি, জীবনাচার ও প্রকৃতি সম্পর্কিত আলোচনা
২৩. শীয়িয়্যাত আওর মুত্’আ।
ভ্রান্ত শিয়া ইমামিয়্যা ইছনা আশারিয়্যার ভ্রান্ত আক্বীদা বিশেষত: মুত্’আ সম্পর্কিত আলোচনা।
২৪. মুজাররাবাতে আহমদী (সম্পাদিত)।
২৫. আনওয়ারে আহমদী ।
আল-জামিয়া পটিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা , শায়খুল হাদীস ও সদরুল মুর্দা রিসীন হযরত মাওলানা আহমদ রহ. (ইমাম সাহেব হুযূর) এর উর্দূ ভাষায় রচিত জীবন-চরিত।এটি তাঁর শিক্ষাজীবনে সর্বপ্রথম রচনা।
২৬. কামালাতে আহমদি।
২৭. মরাছিয়ে মোহাদ্দিছে আজম
হযরত ইমাম সাহেব হুজুর রহ. এর শোকগাথা সংকলন।
২৮. জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া ও কতিপয় স্মরনীয় মাশায়েখ।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ব বিখ্যাত দ্বীনি মারকায ও মকবূল দরসগাহ্ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয় পটিয়া, চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠার পটভূমি লক্ষ্য ও সাফল্য গাঁথার ইতিবৃত্ত সহ জামিয়া সংশ্লিষ্ট কতিপয় মহা মনীষীদের জীবনী সংকলন।
২৮.আল ইমাম
হযরত আল্লামা আল-ইমাম আহমদ রহ.এর মহান জীবন ও কর্মের বর্ণনা, সমকালীন মনীষী ও তাঁর শিষ্য, ভক্ত ও অনুরাগীদের উচ্ছাস পূর্ণ অভিব্যক্তি ।
পিতাজি হযরতুল আল্লামা মাওলানা রফীক আহদ সাহেব (দা.বা.) বর্তমানে বার্ধক্য জনিত কারণে অনেক দূর্বল হয়ে পড়েছেন। মাঝে মাঝে সবক পড়াতেও অক্ষম হয়ে পড়েন। তথাপি আল্লাহ তা’আলার হাদীসের খিদমাত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। আল্লাহ তা’আলা তাঁকে হায়াতে তায়্যিবা দান করুন আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন